ফ্যাসিবাদ (Fascism) হল একটি রাজনৈতিক আদর্শ ও শাসনব্যবস্থা, যা কর্তৃত্ববাদী (authoritarian) এবং জাতীয়তাবাদী (nationalist) নীতিগুলোর ওপর ভিত্তি করে গঠিত। ফ্যাসিবাদী সরকার সাধারণত শক্তিশালী কেন্দ্রীয় ক্ষমতা, ব্যক্তি স্বাধীনতার দমন, বিরোধী মতের প্রতি অসহিষ্ণুতা ,প্রোপাগান্ডার ব্যবহার এবং সামরিক শক্তির উপর নির্ভর করে।
অনুগ্রহ করে আপনার সবচেয়ে মূল্যবান ভোটটি কোনো রাজনৈতিক দল, দলের নেতা বা দলের প্রতীক দেখে বা বিচার করে প্রদান করবেন না। যোগ্যতা, সততা, নৈতিকতা এবং প্রার্থীর মেধা ও তার দেশের ও দেশের মানুষের প্রতি অবদান বিবেচনা করে আপনার ভোট দিন।
আপনার ভোটের উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ ও জীবন নির্ধারিত হবে।অস্থায়ী ব্যক্তিগত লাভ বা টাকার জন্য অনুগ্রহ করে আপনার ভোট বিক্রি করবেন না, যাতে আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্থায়ী জীবন ধ্বংস না হয়।
আমরা চাই, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছয় মাস আগে প্রতিটি প্রার্থীর আত্মজীবনী, সম্পদের উৎস, শিক্ষাগত যোগ্যতা, শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা, কর্মদক্ষতা ও সম্পদের বিবরণ জনগণের সামনে প্রকাশ করা হোক। এটি সরকারি ওয়েবসাইট ও গণমাধ্যমে প্রচার করা যেতে পারে। প্রয়োজনে আমরা সরকারকে বিনামূল্যে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
প্রতিটি প্রার্থীকে জাতির সামনে ইন্টারভিউ দিতে হবে, যা টেলিভিশন, রেডিও ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হবে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, আইনজীবী, পুলিশ ও সাধারণ জনগণ প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন। এছাড়া, নির্বাচনী বিতর্কের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করবেন, যা উন্নত বিশ্বে সাধারণ একটি প্রক্রিয়া।
রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার ছাড়া অন্য কোনো সংস্কার টেকসই হবে না। ক্ষমতায় থাকা দল নিজেদের সুবিধামতো সংবিধান ও আইন তৈরি করলে গণতন্ত্র দুর্বল হবে। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই যেখানে আইনের শাসন থাকবে, নিরপরাধ কেউ সাজা পাবে না, বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হবে না, এবং রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
আমাদের কিছু কথা
আমাদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার জন্য যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাদের সকলের আত্মজীবনী সরকারিভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছয় মাস আগে জনসাধারণের কাছে উন্মোচন করা হবে। তারা কীভাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থ উপার্জন করেছেন, সেটাও জনসাধারণের জানার অধিকার রয়েছে। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, মানসিক ও শারীরিক কর্মক্ষমতা, কর্মদক্ষতা এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অর্থসম্পদের বিবরণ নির্বাচনের ছয় মাস আগে জনসাধারণকে জানাতে হবে। সরকার এটি সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও প্রকাশ করতে পারে। এতে তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তা প্রয়োজন হলে, আমরা বাংলাদেশের সরকারকে বিনামূল্যে তা দিতে প্রস্তুত।
গত নির্বাচনগুলোতে আমরা দেখেছি, অনেক অবৈধ টাকার খেলা চলে। সাধারণত দেখা যায়, দলীয় প্রার্থীতা পেতে একজন প্রার্থীকে দলের কাছে কোটি টাকার বেশি দিতে হয়। ভোট কেনার জন্য টাকার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়, এবং নির্বাচনী প্রচারণায় কোটি টাকার বেশি খরচ করা হয়। এই অর্থ সাধারণত দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জন করা হয়, এবং নির্বাচিত হওয়ার পর প্রার্থী দুর্নীতির মাধ্যমে তার বিনিয়োগের চেয়ে বেশি অর্থ ফেরত নেওয়ার চেষ্টা করে। আগামীতে আমরা এমন প্রার্থী দেখতে চাই, যার যোগ্যতা ও মেধা রয়েছে, হয়তো টাকার অভাব আছে, কিন্তু তার জীবন দুর্নীতিমুক্ত। আমরা চাই না, ন্যূনতম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কোনো প্রার্থী আগামী নির্বাচনে অংশ নিক। আশা করি, সাংবাদিকরা তাদের সম্পর্কে অনুসন্ধানী তথ্য সংগ্রহ করে জনগণকে নির্বাচনের ছয় মাস আগে জানাবেন।
যারা এখনই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, অনুগ্রহ করে দ্রুত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করুন। আমরা তাদের সম্পর্কে অনুসন্ধান করব। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার অবশ্যই আগে করতে হবে। প্রত্যেক প্রার্থীকে চাকরির ইন্টারভিউয়ের মতো জাতির উদ্দেশ্যে ইন্টারভিউ দিতে হবে, যা উন্নত দেশগুলোতে প্রচলিত। এটি টেলিভিশন, রেডিও ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারিত হওয়া উচিত। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রশ্ন করে পরীক্ষা নিতে পারে, যেখানে গণমাধ্যমকর্মীরা, উকিল, পুলিশ, অনুসন্ধানী সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষও প্রশ্ন করার সুযোগ পাবে। প্রত্যেক প্রার্থী নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নেবে এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে যুক্তি-তর্ক করবে।
উন্নত দেশগুলোতে দলনেতা ও রাষ্ট্রপ্রধান বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হন—যার মধ্যে শারীরিক, মানসিক, মেধাগত, নৈতিক ও কৌশলগত সক্ষমতার মূল্যায়ন করা হয়। শুধু মা-বাবার পরিচয়ে রাষ্ট্রপ্রধান হওয়া যায় না। আমরা বাংলাদেশেও এ ধরনের পরিবর্তন দেখতে চাই|গণভোটের মাধ্যমে জাতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের রায় দেবে।
আমরা যতই সংস্কারের কথা বলি, রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার না হলে, অন্য কোনো সংস্কার টেকসই বা কার্যকর হবে না। যারা ক্ষমতায় যাবে, তারা নিজেদের সুবিধামতো সংবিধান রচনা করবে এবং নিজেদের মতো করে দেশ পরিচালনা করবে। আমরা দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চাই। আমরা আইনের শাসন চাই—যেখানে নিরপরাধ কেউ সাজা পাবে না। বছরের পর বছর ঝুলে থাকা মামলা-মোকদ্দমার কারণে বিচারপ্রার্থী মানুষ নিরাশ হবে না। মানুষ অকাল মৃত্যুতে প্রাণ হারাবে না। প্রতিটি জীবন তার পরিবারের কাছে কতটা মূল্যবান, জাতিকে তা উপলব্ধি করতে হবে।
আমাদের প্ল্যাটফর্মের প্রধান উদ্দেশ্য জনসচেতনতা সৃষ্টি করা, যাতে আমরা শীঘ্রই এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি, যেখানে কেউ ক্ষুধার্ত অবস্থায় বা আশ্রয়হীনভাবে রাত কাটাবে না। প্রতিটি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, নিরাপত্তা, চাকরি বা ব্যবসার সুযোগ এবং বৈধ উপায়ে আয়ের ব্যবস্থা থাকবে। আমার মনে হয়, বিগত সরকারগুলো এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাই আমরা আগামী নির্বাচনে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, বিজ্ঞ, মেধাবী ও সর্বজন স্বীকৃত জনপ্রতিনিধি দেখতে চাই।
আমরা এমন এক বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানে শহর, নগর, রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠবে। প্রতিটি এলাকা থাকবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা থাকবে। অকাল মৃত্যু রোধে সরকার সাহসী সিদ্ধান্ত নেবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।